• +88 01914737599
  • markazul.bd@gmail.com
  • মিয়াজান লেন, মানিকনগর, ঢাকা- ১২০৩
Fatwa
সুরমা প্রসঙ্গ আমার এক ভাই বলে, সুরমা ব্যবাহার করা যাবে না এবং

সুরমা প্রসঙ্গ আমার এক ভাই বলে, সুরমা ব্যবাহার করা যাবে না এবং

আপনি যা জানতে চেয়েছেন
ফতোয়া বিভাগ : মারকাযুল ফিকরি ওয়াদ দা‘ওয়াহ
গোপীবাগ, ঢাকা-১২০৩
সুরমা প্রসঙ্গ
ইয়াসিন খান
গোপিবাগ, ওয়ারী, ঢাকা-১২০৩
জনাব মুফতী সাহেব দা: বা: আমার এক ভাই বলে, সুরমা ব্যবাহার করা যাবে না এবং সুরমা সম্পর্কে কোন হাদীসে নেই। এখন আমার প্রশ্ন হলো তার কথা টি কতটুকু সত্য? হাদীসের আলোকে একটু বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তর :
চোখে সুরমা ব্যবহার করা সুন্নত। সওয়াবের নিয়তে সুরমা ব্যবহার করা উচিত, যাতে চোখের উপকারিতার সাথে সাথে সুন্নাতের অনুসরণের সওয়াব ও লাভ হয়ে যায়। হ্যাঁ যদি কোন পুরুষ সুন্দর্যের উদ্দেশ্যে দিনে সুরমা ব্যবহার করে তাহলে তা মাকরুহ হবে। ( জমউল ফাজায়েল – পৃ: ৯২)
বহু হাদীস গ্রন্থে ছহীহ সনদে সুরমার ব্যবহার করার কথা এসেছে, আমাদের প্রিয় নবী (সা.) নিজে সুরমা ব্যবহার করেছেন। এবং উম্মত কেউ তা ব্যবহার করার জন্য উৎসাহ দান করেছেন।
তাই তো হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.) বর্ণনা করেন, নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা ইছমিদ সুরমা ব্যবহার কর। কেননা এটা চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে এবং পলক উৎপন্নে সহায়ক হয়। হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেন, নবী করীম (সা.) এর নিকট একটি সুরমা দানি ছিল। ঐ সুরমা দানী থেকে প্রত্যেক চোখে তিন তিন শলা করে সুরমা ব্যবহার করতেন। ( শামায়েলে তিরমিযী হাদীস – ৪৮ সুনানে তিরমিযী হাদীস – ১৭৫৭, মু‘জামুল কাবীর হাদসি – ১২৪৯১।)
হযরত আবু হুরায়রা (রাযি.) নবী করীম (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি সুরমা ব্যবহার করবে, সে যেন বেজুড় সংখ্যা (শলা) ব্যবহার করে, যে করবে ভাল, আর না করলেও কোন ক্ষতি নেই। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস – ৩৫)
সুরমা শয়ন কালে ব্যবহার করা উত্তম। কেননা ঐ সময় ব্যবহার করলে চোখে দীর্ঘক্ষণ থাকে। ফলে লোমকূপের ভিতর ভালরুপে প্রবেশ করতে পারে। আর বেজুড় শলা ব্যবহার করার তিনটি সুরত হতে পারে,
১. প্রত্যেক চোখে তিন শলা করে ব্যবহার করবে, যেমন শামায়েলে তিরমিযীতে বর্ণিত হয়েছে।
২. উভয় চোখে মোট পাঁচ শলা ব্যবহার করবে, যেমন ডান চোখে তিন বার আর বাম চোখে দুইবার।
৩. প্রত্যেক চোখে প্রথমে দুই শলা করে ব্যবহার করবে, আর একটি শলা উভয় চোখে ব্যবহার করবে। (আস্সামউল মাহমুদ ১/১৩২)
নবী করীম (সা.) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নিয়মে সুরমা ব্যবহার করতেন। প্রত্যেক নিয়মই গ্রহন যোগ্য। হাফেজ ইবনে হাজার, মোল্লা আলী কারী (রহ.) প্রমুখ প্রথম নিয়মটি কেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। একাধিক হাদীস দ্বারা উক্ত নিয়মটিই প্রমাণিত। অন্য সনদে এসেছে, হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) বর্ণনা করেন, নবী করীম (সা.) শয়নকালে প্রত্যেক চোখে তিন শলা করে ইছমিদ ব্যবহার করতেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) কর্তিৃক বর্ণিত অপর এক রেওয়ায়েতে আছে, নবী করীম (সা.) এর কাছে একটি সুরমা দানি ছিল। তিনি ঐ সুরমা দানী থেকে শয়ন কালে প্রত্যেক চোখে তিন শলা করে সুরমা ব্যবহার করতেন। (সুনানে তিরমিযী হাদীস – ২০৪৮, ২০৫২)
এ হাদীসে ইছমিদ সুরমার প্রতি উৎসাহ দান করা হয়েছে। ইছমিদ বিশেষ করে এক প্রকার সুরমাকে বলা হয়। পাশ্চাত্যে এ সুরমা উৎপন্ন হয়। কেউ কেউ বলেন, ইস্পাহানী সুরমাকেই ইছমিদ বলা হয়।
মোট কথা আলেমগণ নবী করীম (সা.) এর এসব বাণী এবং তাঁর অভ্যাসের প্রতি লক্ষ করে বলেন, সুরমা ব্যবহার করা সুন্নাত। বিশেষ করে ইছমিদ সুরমা ব্যবহার করা সর্বোত্তম। অতএব কেউ যদি ইছমিদ ছাড়া অন্য কোন সুরমা ব্যবহার করে, তবে সুন্নত পালন হয়ে যাবে। আর কেউ যদি বলে সুরমা ব্যবহার করা যাবে না, তার কথা সঠিক নয়। আমরা উক্ত হাদীসগুলো দ্বারা তা বুঝতে পারলাম।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে উক্ত আলোচনা বুঝে, তার উপর সঠিকভাবে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *